জগন্নাথপুরে জলমহাল নিয়ে উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশংকা

জগন্নাথপুরে জলমহাল নিয়ে উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশংকা

হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) স্টাফ রিপোর্টারঃ

জগন্নাথপুর উপজেলার কামারখালী নদী ১ম খন্ড উন্মুক্ত জলমহাল এর ফিশিংকে নিয়ে তেলিকোনা গ্রাম এর মৎস্যজীবি মাতাব আলী পক্ষ ও মৎস্যজীবি সামছুল হক  পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে জানা গেছে।
আজ ২৩ শে অক্সটোবর রোজ শনিবার দুপুরে সরজমিনে ঘুরে দেখাযায় ও  জানাযায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাধীন কামারখালী নদী ১ম খন্ড উন্মুক্ত জলমহালে মাছ আহরণ এর জন্য   বিগত বছর গুলোর ন্যায় চলতি সনে টোকেন ফি রেন্টের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক কর্তৃক উপজেলার তেলিকোনা গ্রাম নিবাসী ১৯৮ জন তালিকাভূক্ত মৎস্যজীবি মাছ আহরণ এর অনুমতি প্রাপ্ত হন। মাতাব মিয়ার নামে টোকেন রেন্টের ফি প্রদান করা হয়। টোকেন ফি পাওয়ার আগ পর্যন্ত ১৯৮ জন মৎস্যজীবি ঐক্যবদ্ধ থাকলেও টোকেন ফি পাওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে গ্রুপিং দেখা দিয়েছে। বিগত ২৬ শে সেপ্টেম্বর মাতাব মিয়া পক্ষের লোকজন এই জলমহালে বাঁশ-কাটা লাগানোর সময় সামছুল হক পক্ষের লোকজন বাধা প্রদান করিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম্য সালিসি ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে পরিবেশ তখনকার মতো শান্ত হয়। এরই জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলছে। জলমহালে ফিসিংকারী লোকজন থাকা সহ জাল- রশি রাখার জন্য চন্ডিঢহর টেম্পো স্ট্যান্ড হতে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণ পার্শ্বে নদীর পাড়ে মাতাব আলী পক্ষের ঘর রয়েছে। এদিকে  একই জলমহাললে মাছ ধরার লক্ষে ফিসিংকারী লোকজন থাকা সহ জাল-রশি রাখার লক্ষে সামছুল হক পক্ষের লোকজন গতকাল ২২ শে অক্টোবর রোজ শুক্রবার এই নদীর পূর্ব পাড়ে (চন্ডিঢহর টেম্পো স্ট্যান্ড হতে একশত গজ দক্ষিণ পার্শ্বে) ঘর নির্মাণকালে বিকাল প্রায় ৫ ঘটিকার সময় মাতাব আলী পক্ষের ফারুক মিয়া সহ গং ব্যক্তিবর্গ বাধা প্রধান করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলেও পুলিশ প্রশাসন আসছে এমন সংবাদে উভয় পক্ষ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।সামছুল হক পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এই নদীর পশ্চিমপাড় দিরাই উপজেলাধীন হুসেনপুর বাজারের পূর্ব পার্শ্বে দল বেধে আছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান এর দিক নির্দেশনায় অত্র থানার এসআই জহির আহমেদ সন্ধ্যালগ্নে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এনিয়ে অত্র গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনে মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে।
এব্যাপারে একান্ত আলাপকালে অত্র এলাকার  কাহার,পাবেল, ইনাম সহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, কামারখালী নদী ১ম খন্ড উন্মুক্ত জলমহাল এর মাছ আহরণ  নিয়ে তেলিকোনা গ্রাম এর দুটি পক্ষের মধ্যে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে অনাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মাতাব আলী পক্ষ ও সামছুল পক্ষ কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। বিধায় ঝগড়া প্রসাদ নিরসনে  প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে মাতাব আলী পক্ষের ফারুক আহমেদ বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সামছুল হক পক্ষের লোকজন কামারখালী নদী ১ম খন্ড উন্মুক্ত জলমহালে মাছ আহরণ এর লক্ষে নদীর তীরে ঘর নির্মাণ করছে জানতে পেরে তাদের বাধা দিতে গেলে রকমারি  অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে  আমাদের উপর হামলা করতে চাউলে আমাদের লোকজন নিয়ে চলে আসি। তারা নৌকা ভর্তি অস্ত্র নিয়ে এই নদীর পশ্চিম পাড়ে দিরাই উপজেলা এলাকায় অবস্থান করলে বিষয়টি দিরাই থানা পুলিশকে অবহিত করি। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে  সামছুল হক এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ থাকায় আলাপ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর বড় ভাই কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর মেম্বার আছাদুল হক  মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, কামারখালী নদী ১ম খন্ড উন্মুক্ত জলমহাল আমাদের তেলিকোনা গ্রাম এর তালিকাভুক্ত ১৯৮ জন মৎস্যজীবি টোকেন ফি প্রথায় মৎস্য আহরণ এর অনুমতি প্রাপ্ত হয়েছেন। জেলা প্রশাসক এর কার্যালয়ে টোকেন ফি প্রদান করা হয়েছে মাতাব আলীর নামে। এখন সামছুল হক গং ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে মাতাব আলী নিজের পছন্দের লোকদের নিয়ে মাছ আহরণ এর চেষ্টা করছে। এতে বঞ্চিতরা প্রতিবাদ করছেন। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, শুনেছি মাছ আহরণ এর জন্য নদীর পাড়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী দিরাই থানার এসআই জহির আহমেদ বলেন, সংঘর্ষ হতে পারে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অফিসার ইনচার্জ মহোদয়কে অভিহিত করেছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন